শিরোনাম
আফছার উদ্দিন লিটন: | আপডেট: ০৪:২৮ পিএম, ২০২১-১০-০৯ 605
অসুস্থতা বেশি হলে মানসিকভাবে অসুস্থ্য হয়। মানসিকভাবে বেশি অসুস্থ্য হলে মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। মানসিক চাপ বেশি হলে মানুষ বিপর্যস্ত হয়। তখন একা থাকতে ভালবাসে। নিজের সাথে নিজে কথা বলে। কখনও হাসে। কখনও কাঁদে। কখনও বা রাগে। ভালবাসে অন্ধকারকে। ভাবে। ভাবতে ভাবতেই সিদ্ধান্ত নেয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। মেজাজ খিটখিটে হয়। মারমুখি হয়। শুধু সমাজে অপরাধ বাড়লে তা থেকে যে খুন-খারাবি হয়Ñতা কিন্তু নয়। মানসিক সমস্যায় ভুগলে তা থেকেও খুন-খারাবি হতে পারে। আর খুন-খারাবির কারণে মানুষ নিজে মরে; অন্যকেও মারে। অথবা অন্য মানুষকে মেরে নিজেই মরে। অথবা শুধু নিজে মরে। এই মহাপাপগুলো ঘটে শুধুমাত্র প্রচন্ড মানসিক চাপের কারণে। খুন জঘন্যতম অপরাধ এবং পাপ। খুনীরা জীবনের বাকি রাতগুলোতে ঘুমোতে পারে না।
আর আত্মহত্যা মহাপাপ। তবে ঝঁরপরফব করতে গিয়ে কেউ যদি সৌভাগ্যবশত: বেঁচে যায় তবে ঐ ব্যক্তি কোনদিনই আর নিজে নিজে মরতে চাইবে না। কারণ মৃত্যুর যন্ত্রণা, মানসিক চাপের চেয়ে অনেক বেশি।
দ্রুত গতির যুগে মানসিক চাপ খুব বেশি। এদিকে সার্স কোভ-২ ভাইরাসের প্রকোপে রোজকার জীবনযাত্রা আমূল বদলে গিয়েছে। অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বেড়ে চলেছে মানসিক চাপ, অবসাদ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যেও মনের অসুখ বাড়ছে। ২০% বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের মধ্যে মানসিক সমস্যা দেখা যায়। ১৪ বছর বয়সের মধ্যে ৫০% এবং ২৪ বছর বয়সে ৭৫% মনের অসুখ ধরা পড়ে। বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে ৭০% ১৮ বছর বয়সের মধ্যে কোনও না কোনও সময় মানসিক সমস্যা দেখা যায়। বাবা-মা কিংবা স্কুল শিক্ষকরা তা বুঝতে না পেরে বকাবকি আর মারধর করলে সমস্যা বেড়ে গিয়ে আত্মহনন পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে।
বিভিন্ন মনের অসুখের মধ্যে রয়েছে এংজাইটি, অবসাদ, ইটিং ডিজঅর্ডার, পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, স্কিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মনের অসুখের উপসর্গ হিসেবে চুপচাপ বসে থাকা, চিৎকার চেঁচামেচি, জিনিসপত্র ভাঙচুর, মারধর ও আত্মহত্যার কথা বলা ও চেষ্টা করা ইত্যাদি দেখা যায়। এমন হলে অবশ্যই মনের ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। সঙ্গে দরকার সচেতনতা ও সহনশীলতা।
মনের কষ্ট চেপে রাখা উচিত নয়। বন্ধু বা ভাই-বোনকে খুলে বলা উচিত। কাছের মানুষদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিলে যেমন আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায়, তেমনই দুঃখ ভাগ করে নিলে দুঃখ অনেক কমে যায়। কিন্তু অনেকে আবার দু:সময়ে বন্ধু কিংবা শুভাকাক্সক্ষীদের মনের কথা শেয়ার করতে গিয়ে বিপদে পড়ে যায়। তারা ওই সরল বন্ধুদের সরলতাকে দুর্বলতাকে ভেবে ইমোশনাল ব্লেকমেইল করেন। যা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায়না। এতে করে তাদের ধ্যান-ধারণা এবং খারাপ চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ পায়। যেহেতু তাদের চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে। এ সমস্ত খারাপ মানুষ থেকে দূরে থাকা উচিত।
রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকতে গিয়ে ঘুমের সময় কমে গিয়েছে। কম ঘুম হলে মনের উপর চাপ বাড়ে। সকলের ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। সঠিক ডায়েট মন ভাল রাখতে সাহায্য করে। তাই সুষম খাবার খেতে হবে। মা, বাবা, দাদা-দাদি, ভাই-বোন আর ভাল বন্ধুদের সঙ্গে দিনের কিছুটা সময় কাটালে মন ভাল থাকবে। মোবাইলে চ্যাট না করে কথা বললে মন ভাল থাকে। নিয়মিত শরীরচর্চা করে ওজন ঠিক রাখতে হবে। ওজন বাড়লে অবসাদ বাড়ে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট সময় নিজের জন্যে রাখতে হবে। ভাল বই পড়া, গান শোনা, ভালো সিনেমা দেখলে মনে আনন্দ জাগে। বিষণœতা কাটে। এছাড়া পোষ্যের সঙ্গেও সময় কাটালে ভাল লাগবে। ভার্চুয়াল জগতের বদলে নিজের চারপাশের গাছপালা বা পাখি অথবা প্রাণীদের দিকে মন দিলেও ফল মিলবে। ভাল থাকতে হবে শরীরে ও মনে।
বেসরকারি চাকরিজীবী ইসরাত জাহান পনি করোনায় আক্রান্ত হন। পরে তার সংস্পর্শে থাকার কারণে আক্রান্ত হন তার স্বামী সোহেল আকবর সুমন। তাদের দুজনের অনেক ভালোবাসা। দুজনেই রবির কপোত-কপোতি-জয়’ সিম ব্যবহার করে। একজনের মোবাইল নাম্বারের শেষে ৮০ এবং অন্যজনের মোবাইল নাম্বারের শেষে ৮১। তাদের দুজনের এতোই ভালোবাসা-যেখানে যাই তারা, হাতে-হাত রেখে চলে। গাড়িতে উঠলেও তারা একজন আরেকজনের পাশে বসে জড়িয়ে ধরে। গাড়িতে আত্মীয়-স্বজন থাকলেও তারা তার কর্ণপাত করে না। তারা একজন-আরেকজনকে জড়িয়ে ধরবেন। ধরবেনই। এটি তাদের জন্য একটি নিত্য ঘটনা। অথচ করোনাকালে তারা কতো অসহায়। করোনা তাদের ভালোবাসায় ম্লান। করোনায় শারীরিকভাবে পনি যতটা ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে বেশি মানসিকভাবে ক্ষতি হয়েছেন তিনি। আসলে এটা একটা মানসিক যুদ্ধ। যারা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তারাতো বটেই-পরিবারের অন্য মানুষগুলোর জন্যও সমান প্রযাজ্য। এটা যে কেবল ভুক্তভোগী অন্যর বক্তব্য তা-ই নয়, বরং করোনা রোগী এবং করোনা রোগী নন এমন অনেকেই যে এখন তীব্র মানসিক অবসাদে ভুগছেন, তা জোর দিয়েই বলছেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরাও।
করোনাকালে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। সংস্থাটি বলছে, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভুগছেন এমন মানুষরা যদি সর্বোচ্চ চিকিৎসাও পান, তারপরও তাদের লক্ষণ বেড়ে যাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেছেন, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মহামারির প্রভাব ইতোমধ্যে মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকা, সংক্রমণভীতি, পরিবারের সদস্য হারানোর দুঃখ ও কষ্ট এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উপার্জন ও চাকরি হারানোর ভয়। করোনাকালে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরও। গত ৪ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং অর্থনৈতিক অনিরাপত্তা আমাদের সবার মনের ওপরে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে। এর ফলে অনেকেরই নিয়মিত ঘুম ব্যাহত হচ্ছে।’ মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে নিয়মিত রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। রোগী কমেছে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারেও। তবে ঘরে ঘরে মানুষের নানা ধরনের মানসিক সংকট বেড়ে চলেছে বলে জানতে পারছেন তারা। ফোনেই অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কাউন্সিলিং করছেন। অনেকের মন্তব্য, দেশে করোনায় আক্রান্তদের সংখ্যা হয়তো গোনা যাচ্ছে, কিন্তু মানসিক চাপে থাকা বা মানসিক সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না বা গোনা যাচ্ছে না। সারাদেশের মানুষই এখন প্রচন্ড মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন। ফলে এটাই এখন মারাত্মকভাবে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য মতে, লাখ লাখ প্রাণের বিনিময়ে হয়তো কোভিড প্যান্ডেমিক মোকাবিলা করা যাবে, কিন্তু এর প্রভাবে যে ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ চলছে সেটা হলো মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পেন্ডামিক। বহু মানুষ বিষণœতায় আক্রান্ত হচ্ছেÑপেন্ডামিক থাকা পর্যন্ত হয়তো আরও হবেন। বহু মানুষ পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে (পিটিএসডি) ভুগবেন। চীনের উহান, ইতালি এবং নিউইয়র্কে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষের মধ্যে পিটিএসডি হওয়ার আশঙ্কা আছে। যুদ্ধ, পেন্ডামিক বা যেকোনও বড় বিপর্যয়ের পরে এটা হয়ে থাকে বলেও মন্তব্য মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। আর তাই মানসিক স্বাস্থ্যের যে বিপর্যয় তাকে মোকাবিলার জন্য একটি লংটার্ম পরিকল্পনা দরকার বলেও মন্তব্য তাদের।
তবে অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা কম। বহির্বিভাগে সাধারণ সময়ের চেয়ে রোগী আসছে চার ভাগের এক ভাগ, রোগী ভর্তি রয়েছে বেডের তুলনায় তারও কম। তাই প্রকৃত চিত্র বোঝায় উপায় নেই, বলছেন চিকিৎসকরা। যাতায়াত ব্যবস্থা, হাসপাতালে সংক্রমণ ভীতি, বাইরে যাওয়ার ভীতি, হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা এসব কারণে মানুষ ‘মিসিং’। আবার সব ধরনের ওষুধও এসব রোগীদের দেয়া যাবে না উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলছেন, আলাদা করে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দেয়া হলেও করোনা বিষয়ক জাতীয় চিকিৎসার যে গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে, তাতে ‘ইন্ট্রিগ্রেটেডভাবে’ মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বলা হয়নি। এটা খুবই জরুরি কোভিড রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্যসহ যারা চিকিৎসা দিচ্ছেন তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্যও।
‘করোনাভাইরাসকালীন মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব’ শীর্ষক একটি জরিপ করেছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটি। গত ১৪ মে প্রকাশিত জরিপের ফলাফলে বলা হয়, করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে ব্যাপকভাবে। জরিপে দেখা গেছে, উত্তরদাতাদের মধ্যে করোনার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ৯১ দশমিক ৪ শতাংশ, অনিদ্রায় ভুগছেন ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ, বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ ৭১ দশমিক ৬ শতাংশ, ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা আর শঙ্কার কথা বলেছেন ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ। অপরদিকে, সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আতঙ্কিত ৬৮ দশমিক ২ শতাংশ। আর জীবন অর্থহীন হয়ে পরেছে এমনটা বলেছেন ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটট ও হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ খান ও সিফাত-ই সৈয়দ ‘করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে ৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু কিশোরদের আচরণ ও আবেগজনিত পরিবর্তন’ শীর্ষক একটি অনলাইন জরিপ করেছেন। এই জরিপে শিশুদের মা-বাবার কাছ থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে। এই দুই বিশেষজ্ঞের জরিপের ফলাফল এখনও অপ্রকাশিত। তবে তারা জানান, জরিপে শিশুদের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আচরণগত পরিবর্তন পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে শিশুদের ঘুমের সমস্যা, আগ্রাসী আচরণ, রুটিন এলোমেলো হয়েছে। একইসঙ্গে মনমরা হয়ে থাকা, কান্নাকাটি করার সমস্যাও পাওয়া গেছে। এই জরিপে একইসঙ্গে শিশুদের মা বাবাদের মানসিক চাপও পরিমাপ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, যে সব বাবা-মায়েদের মধ্যে মানসিক চাপ বেশি, তাদের সন্তানের মধ্যেই আচরণগত পরিবর্তন বেশি, অথবা বিপরীতভাবে যেসব শিশুর মধ্যে আচরণগত মানসিক চাপ বেশি, সেই শিশুদের বাবা-মায়ের মধ্যেই মানসিক চাপ বেশি।
করোনার সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য কী অবস্থায় আছে তা নিয়ে এখনও জাতীয় পর্যায়ের কোনও জরিপ নেই জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সালাহউদ্দিন কাউসার বিপ্লবের মতবাদও অনেকটা তাই। তার মতে-‘সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বিগ্নতা রয়েছে। তবে সেটা রোগের পর্যায়ে কিনা, এটা এখনই বলা যাবে না। যেহেতু তারা চিকিৎসকের কাছে আসছেন না। তবে পেন্ডামিক সিচুয়েশন, অভিজ্ঞতা বা বৈজ্ঞানিকভাবেও মানুষের সমস্যা বাড়ার কথা বলা যায়।’ বর্তমান অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের কী কী ক্রাইসিস চলছে, করোনার পরে আফটার ইফেক্ট হিসেবে কী কী মানসিক সমস্যা হতে পারে, তার প্রেডিকটিভ রিসার্চ এবং রেজাল্ট করা উচিত বলে জানান অধ্যাপক সালাহউদ্দিন কাউসার। মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেনÑ করোনাকালিন এই সময়ে কেবল করোনা আক্রান্ত রোগী নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বিগ্নতা, বিষণœতা, ঘুম না হওয়া বহুগুণ বেড়ে গেছে।’এসব মানসিক সমস্যা কাটাতে স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রাখতে হবে। এই মুহূর্তে যাদের মধ্যে মানসিক সমস্যা সংক্রমিত হচ্ছে, তাদের চিকিৎসার জন্য দেশে যথেষ্ট পরিমাণে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নেই। তাই সব চিকিৎসকের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিও মাথায় রেখে চিকিৎসা দেয়ার অনুরোধ করছেন তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব ডা. রিজওয়ানুল করিম শামীম, বলছে অন্য কথা। তার মতে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্দেশনার আলোকে করোনার সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য এবং মনোসামাজিক বিবেচ্য বিষয়গুলো নিয়ে গাইড লাইন করা হয়েছে গত ১৫ মার্চ। এর মধ্যে সাধারণ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য, ফ্রন্ট লাইন ওয়ার্কার, নাজুক জনগোষ্ঠী (অন্তঃসত্ত্বা মা, শিশু, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক মানুষ) এবং সেবাদানকারীদের ব্যবস্থাপকদের জন্যও করণীয় বিষয় রয়েছে। করোনার সময়ে সবচেয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব। আবার একইসঙ্গে এটা সবচেয়ে অমানবিক ব্যবস্থা। করোনা আক্রান্ত হলে ওই ব্যক্তি কাছের মানুষের সাহচার্য থেকে দূরে থাকছেন। এতে করে মানসিক প্রশান্তির মতো অনুভূতি থেকে মানুষ ডিপ্রাইভ হচ্ছে। এটা রোগী এবং স্বজন সবার জন্যই অত্যন্ত কষ্টকর বিষয়, যেটা থেকে মানুষ নানা ধরনের মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।’
করোনার নমুনা সংগ্রহের সময় রোগীদেরকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুযায়ী সচেতনতামূলক পোস্টার, লিফলেট তৈরি করে বিতরণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে অনলাইনে দেশের ৩৮০টি স্বাস্থ্য স্থাপনার ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এছাড়া, ১৬২৬৩ নম্বরে তিন শিফটে তিন জন করে সাইকোলজিস্ট নিয়োগও দিয়েছে এ দপ্তর। এই সেবা এখনও চলমান রয়েছে।
চট্টলার ডাক ডেস্ক: ইসলামি পরিভাষায় নির্দিষ্ট কয়েকটি শব্দ আছে, যে শব্দ গুলো প্রত্যেক মুসলমানই জানেন। কিন্তু এর ব্যবহ�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ১০টি পদ্ধতি ০ ওজন হ্রাস করুন। ০ দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন। ০ দৈনিক ৩০ ম�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগ নিয়ন্ত্রণে না আনলে লিভারে...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: হঠাৎ হার্ট এটার্ক হলে বাঁচবেন কিভাবে? মনে করুন, সন্ধ্যা ছয়টার সময় একা একা বাড়িতে বসে আছেন। বাসার মা�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: মাদকাসক্তি, যৌন নিপীড়নের শিকার আর স্কুলে সহপাঠীদের বেদম মার খাওয়া- চেস্টার বেনিংটনের গল্পের শুরু�...বিস্তারিত
আফছার উদ্দিন লিটন: ২০২১ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে হঠাৎ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ গণহারে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের আইডি রহ�...বিস্তারিত
© Copyright 2024 Dainik Chattalar Dak