শিরোনাম
আফছার উদ্দিন লিটন: | আপডেট: ০১:০৭ এএম, ২০২১-০৬-১৯ 1292
সীতাকুণ্ড উপজেলার মৎস্য চাষি মো. আলী। তিনি ২০ বছর ধরে মৎস্য চাষ করে আসছেন। তিনি পুকুরে মাছ চাষে যেমন সফল ঠিক তেমনি পুকুরের পাড়ে সবজি চাষেও ব্যাপক সফল। দেশে মিশ্র পদ্ধতিতে পুকুরে মাছ এবং পাড়ে সবজি চাষ এখন লাভজনক জীবিকা হওয়ায় এর গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে দুই দিক থেকেই আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন মৎস্যচাষিরা। বাংলাদেশ বিশ্বে মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ। শাক-সবজি উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয়। আবার বিশ্বে শাক-সবজি আবাদের জমির পরিমাণ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ প্রথম। যে কারণে পুকুরে মাছ চাষ এবং তার পাড়ে সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছে এখন বেকার যুবকরা। শুধু তাই নয়, তারা এখন চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরাই উদ্যোক্তা হতে চাচ্ছেন। এতেই শেষ নয়। মৎস্যচাষি মো. আলী তার অধম্য চেষ্টা, নিজস্ব বুদ্ধি এবং ইপসা’র সহযোগিতায় ১.৫ একর আকারের পুকুরের চার পাড়ে গড়ে তুলেছেন একটি সবজি বাগান। এ বাগান থেকে উৎপাদিত শাকসবজি ও ফল দিয়ে তার পরিবারের চাহিদা মেটানোর পর অতিরিক্ত শাকসবজি ও ফল বিক্রি করে তিনি বছরে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করেন।
পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি পাড়ে সারাবছরই কিছু না কিছু শাক-সবজির আবাদ করা যায়। স্থায়ী এবং অস্থায়ী দুভাবেই চাষ করা যেতে পারে। স্থায়ী চাষের মধ্যে রাখা যেতে পারে আনাজি কলা, পেপে ইত্যাদি। অপরদিকে অস্থায়ী মৌসুমী চাষের মধ্যে রাখা যেতে পারে লাউ, শিম, পটল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, শশা, করলা, লালশাক, ডাটা, ঢেঁড়শ, টমেটো, মিষ্টিকুমড়া, চাল কুমড়া, ধুন্দুল, বরবটি, কলমিশাক, পুঁইশাক, মিষ্টিআলু শাক ইত্যাদি।
কৃষক ও মৎস্যচাষি মো. আলী বলেন, পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুর পাড়েথে অব্যবহৃত পতিত জমিতে সবজি চাষ করার বিষয়ে আমি সীতাকুণ্ডের স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসার পরামর্শেই কাজ শুরু করি। এক্ষেত্রে ইপসা শুধু আমাকে ঋণ দিয়ে সহযেগিতা করেনি তারা এ বিষয়ে প্রশিক্ষণও দিয়েছে। ফলে, পুকুরে মাছচাষের পাশাপাশি পুকুরের পাড়ের পতিত জমি সবজি চাষের আওতায় এনে সফল হয়েছি। পুকুর পাড়ে লাউ, চালকুমড়া, চিচিঙা, বরবটি, টমেটো, শিম চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি এবং হচ্ছি। পুকুরপাড়ের পতিত জমিতে সবজি চাষে সফল হওয়ায় আমার দেখাদেখিতে গ্রামে এখন অনেকেই পুকুর পাড়ে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
মৎস্যচাষি মো. আমজাদ হোসেন বলেন, পুকুরের পাড়ে বিভিন্ন ধরনের ফসল, ফল, গাছ-গাছরা রোপণের সুযোগ থাকলেও সেখানে সারাবছর নানারকমের মৌসুমী শাক-সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। এতে জমির সদ্ব্যবহার যেমন নিশ্চিত হয় বাড়তি আয়েরও সুযোগ সৃষ্টি হয়। আর পুষ্টির যোগানের বিষয়টি তো রয়েছেই। বেকারত্বও কিছুটা দূরিভূত হচ্ছে। গ্রামের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এলাকার মাছচাষীরা সাধারণত পুকুর কাটে অপরিকল্পিতভাবে। সেখানে তারা শুধু মাছ চাষ করেন। প্রত্যেক পুকুর মালিকের উচিৎ পুকুরপাড়ের জমি ফেলে না রেখে ফল-মূল ও শাক-সবজি চাষ করা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসা’র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসিন মিঞা বলেন, ইপসা মৎস্য চাষিদের স্বনির্ভর হওয়ার জন্য কাজ করেন। পুকুরের পাশাপাশি পুকুর পাড়ের সর্বোত্তম ব্যবহারের প্রতি জোর দিয়ে চাষিদেরকে বিভিন্ন প্রকারের ফলজ গাছ, সবজির বীজ, সবজি চাষের উপকরণ (মাচার জাল, বাঁশ) ইত্যাদি বিতরণ করেন। এতে করে চাষিরা পুকুর পাড়ে বিভিন্ন ফল ও সবজি চাষের ব্যাপারে উৎসাহিত হয়। মো. আলিও ইপসার সহযোগিতা পেয়ে লাভবান হয়েছে। মো. আলীর সফলতা দেখে গুলিয়াখালির আরও বাইশজন মৎস্যচাষি পুকুর পাড়ে সবজি চাষ করছে। ইপসা থেকে মৎস্য চাষিদের পুকুর পাড়ে সবজি চাষ করার জন্য কি ধরনের সহযোগিতা করা হয় এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহসিন মিঞা আরও বলেন, আমরা মৎস্যচাষিদের পুকুরপাড়ে কিংবা ঘেরের পাড়ে সবজি চাষ করার জন্য চাষিদের ইপসা থেকে ঋণ দেয়ার পাশাপাশি তাদেরকে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণও দিচ্ছি।
দেশে বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আবাদের জমি দিনদিন কমে যাচ্ছে। দেশজ শাক-সবজির উৎপাদন বাড়ানোর জন্য পুকুরের পাড়কে গুরুত্ব দেয়া উচিত কিনা জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার দত্ত বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। এতে গ্রামের কৃষক ও মৎস্যচাষিদের দারিদ্র নিরসন হচ্ছে। তবে, এ কাজে মহিলাদেরকেও সম্পৃক্ত করা গেলে তাদের কাজের ব্যস্ততা বাড়বে। কর্মসংস্থান হবে। বাড়ির বসতভিটায় পুকুরকে যদি কাজে লাগিয়ে মাছ চাষ ও পুকুরের উপরে মাচা কিংবা চাং দিয়ে লাউ, লতা জাতীয় সবজি এবং পাড়ে লাউ, চালকুমড়া, চিচিঙা, বরবটি, টমেটো, শিম, লাল শাক, পুঁই শাক, ঢেঁড়শ, পটল চাষ করলে আমাদের সবজির চাহিদা যেমন পূরণ হবে তেমনি শরীরে পুষ্টির ঘাটতিও দূর হবে।
জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শামীম আহমেদ বলেন, পুকুর পাড়ে সবজি চাষ এটি মৎস্য এবং কৃষি বিভাগের সমন্বিত কাজ। আমরা কৃষকদেরকে এ বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করছি। যাতে পুকুরে কিংবা ঘেরের পাড়ে অব্যবহৃত জমিতে সবজি চাষ করা হয়। এতে আর্থিকভাবে মৎস্য চাষিরা কেমন লাভবান হচ্ছেন তা জানতে চাইলে শামীম আহমেদ আরও বলেন, এটি বেকারত্ব এবং দারিদ্য নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
চট্টলার ডাক ডেস্ক: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের মানুষের আয় হ্রাস পাওয়ায় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর জরিপ�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: চট্টগ্রাম জনতা ব্যাংক চাক্তাই শাখার শাখা ব্যবস্থাপক সুজশ কান্তি বড়ুয়া এসপিওকে ক্রেস্ট দিচ্ছেন জ�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: জনতা ব্যাংক পিএলসি চাক্তাই শাখার উদ্যোগে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নির্দেশত “ ৫০ দিনের বি...বিস্তারিত
মো. বেলাল হোসেন চৌধুরী ‘নারী মাঠে যেতে পারে না’-এ কথা আমরা বলতে চায় না। তারা সব পারে; কিন্ত পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান �...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: আল-আমিন হাসপাতাল (প্রা.) লিমিটেড ৮৩০, জাকির হোসেন রোড, একে খান মোড়, উত্তর পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম। ...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: সুপার রাজমহল রেস্তোরাঁ এন্ড বেকার্স। একে খানঁ মোড়, আকবরশাহ্, চট্টগ্রাম। ...বিস্তারিত
© Copyright 2024 Dainik Chattalar Dak