শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক: | আপডেট: ০১:২২ পিএম, ২০২০-০৯-২১ 981
মিসেস শাহেদা আলম
সাক্ষাৎকার
মিসেস শাহেদা আলম। সরকারি খাস্তগির বালিকা উচ্ছ বিদল্যায়ের প্রাক্তন শিক্ষিকা। তিনি একজন শিক্ষানুরাগী কবি ও মুক্ত বুদ্ধি চর্চার লেখক। পাশাপাশি তিনি একজন রতœাগর্ভা জননী। তাঁর দুই সন্তান দেশের সুপ্রতিষ্ঠিত নাগরিক। বড় ছেলে ডা. শামস মো. নোমান। তিনি চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের গ্লুকোমা সার্জন ও কনসালটেন্ট। ছোট ছেলে শামস মো. মামুন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল। শাহেদা আলম কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত। তাঁর সাথে সাক্ষাতকারে শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন চট্টলার ডাক পত্রিকার সম্পাদক আফছার উদ্দিন লিটন।
চট্টলার ডাক : শুরুতেই জানতে চাই আপনার শৈশবের কথা। শৈশব কেটেছে কোথায় ?
শাহেদা আলম : সেই পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে বাবা সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন বিধায় ঢাকা, কুমিলা ও পশ্চিম পাকিস্তানেই আমার শৈশব কেটেছে। শৈশবে যেমন ছিলাম দুষ্টু এবং চঞ্চল প্রকৃতির, ঠিক তেমনি ছিলাম মেধাবী। আমার বাবা দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ান আর্মিতে সেনা অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বার্মার রেঙ্গুন সেক্টরে ২য় বিশ^যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এক কথায় বলা যায় শৈশবে মুখরিত ও প্রাণবন্ত থাকায় জীবন মধুরভাবে কেটেছে।
চট্টলার ডাক: আপনি পড়ালেখা করেছেন কোথায়?
শাহেদা আলম : আমার বাবার সরকারি চাকরির সুবাধে আমি পড়ালেখা করেছি কুমিলা, ঢাকা এবং পাকিস্তানের করাচিতে। প্রাথমিক শিক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণি পাশ করি কুমিলা শৈলরানি বিদ্যাপীঠ থেকে। পাকিস্তানের করাচি সেন্ট এগনেস স্কুল থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি পাশ করি। এরপর, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট মডার্ন স্কুলে (শহিদ আনোয়ার স্কুল এন্ড কলেজ) পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করি। তেজগাঁও সরকারি স্কুল থেকে এস.এস.সি পাশ করি। ১৯৬৭ সালে আদি ইডেন কলেজ যা বর্তমানে বদরুননেসা সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি সম্পন্ন করি। পর্যায়ক্রমে ১৯৭০ সালে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অধিনে দিনাজপুর গর্ভমেন্ট কলেজ থেকে বি.এসসি সম্পন্ন করি। এরপর শিক্ষকতা পেশায় চাকরিরত অবস্থায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধিনে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বি.এড ও এম.এড ডিগ্রি অর্জন করি।
চট্টলার ডাক: কবিতা চর্চা করতে আপনার কেমন লাগে ?
শাহেদা আলম : কবিতা চর্চা করতে আমার খুব ভালো লাগে। কবিতার মাঝে যখন হারিয়ে যাই, তখন আমার আমিকে খুঁজে পাই।
চট্টলার ডাক: মন ভালো না থাকলে কি করেন ?
শাহেদা আলম : মন ভালো না থাকলে প্রথমত, আমি বিধাতাকে আরো বেশি করে স্মরণ করি। দ্বিতীয়ত, মনের প্রশান্তির জন্য গঠনমূলক সৃজনশীল কাজের মাঝে নিজেকে আত্মনিয়োগ করি। যেমন ধরুন কবিতা রচনা কিংবা রান্না করা। এছাড়া যখন আমার মন ভালো থাকেনা, তখন আমি প্রকৃতি ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের কাছে ছুটে যাই। প্রকৃতির নিগূড় বন্ধনের এক অনাবিল প্রশান্তি খুঁজে পাই।
চট্টলার ডাক: ষড়ঋতুর দেশে আপনার কাছে কোন ঋতু প্রিয়?
শাহেদা আলম : আমাদের সুজলা-সুফলা ও শস্য-শ্যামলা সোনার বাংলাদেশে যে ৬টি ঋতু তার রূপে-বৈচিত্রে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে তার মধ্যে শীত ও বসন্ত আমার কাছে প্রিয় ঋতু। ষড়ঋতুর দেশে প্রতিটি ঋতুর আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন রয়েছে শীত ও ঋতুরাজ বসন্তের। এ দুটি ঋতুর বৈশিষ্ট্য আমার মনকে বিশেষভাবে স্পর্শ করে।
চট্টলার ডাক : একজন পরিণত মানুষ হওয়ার জন্য সমাজে সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব কতটুকু ?
শাহেদা আলম : আমাদের নিজস্ব একটা সংস্কৃতি রয়েছে। সংস্কৃতি ছাড়া সমাজ ও রাষ্ট্র অচল। সংস্কৃতি না থাকলে একটি দেশ সভ্য হতে পারে না। সভ্য হতে পারে না সেদেশের মানুষও। তাই আমাদেরকে একজন পরিণত মানুষ হওয়ার জন্য ধর্মীয় মূল্যবোধের পাশাপাশি সংস্কৃতি ধারণ ও চর্চা করা খুবই প্রয়োজ। আামদের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য বিদেশী সংস্কৃতি থেকে ভাল কিছু গ্রহণ করতে পারি। কিন্তু অন্ধ অনুকরণ বা অনুসরণ ও অপসংস্কৃতির প্রভাব থেকে অবশ্যই মুক্ত থাকতে হবে।
চট্টলার ডাক : আপনার লেখায় স্বরচিত কোনো বই কি বাজারে এসেছে?
শাহেদা আলম : না। এখন পর্যন্ত বাজারে আমার স্বরচিত বই আসেনি। তবে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, ম্যাগাজিন ও সাময়িকীতে আমার লেখা বেশ কিছু কবিতা ও প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। এখন অবসর জীবন-যাপন করছি। এ অবসর সময়ে বই পড়ার পাশাপাশি লেখালেখিরও চেষ্টা করছি। তবে, ২০২২ সালের মধ্যে এককভাবে আমার কবিতা কিংবা প্রবন্ধ বই বের করার ইচ্ছে রয়েছে, ইনশালাহ।
চট্টলার ডাক : আপনি লেখার সময় কোন বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন ?
শাহেদা আলম : আমার লেখার মধ্যে জীবনবোধ, জাতীয়তাবোধ ও সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করি। এছাড়া আমার লেখায় দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার কথাও ফুটে ওঠে। আমি মনে করি, একজন লেখক ও সাংবাদিকের লেখা হওয়া উচিত জনকল্যাণমূলক। তাঁদেরকে বেশি করে লেখা উচিত দুর্নীতি, অনিয়ম ও শোষণের বিরুদ্ধে।
চট্টলার ডাক : ফেসবুক এবং অনলাইন ব্যবহারের দৌরাত্ম্যে বই প্রেমিরা বই পাঠে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে; আপনার মতে এর কারণ কী?
শাহেদা আলম : এ বিষয়ে আমি পুরোপুরি একমত নয়। কারণ, যাঁরা প্রকৃত বই প্রেমি, তাঁরা ঠিকই বই পড়ছেন এবং সংগ্রহ করছেন। তবে, ফেসবুক এবং অনলাইনের দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষ বই পড়ার আগ্রহ কিছুটা হলেও হারিয়ে ফেলছে বলা যায়। আমার মতে, ফেসবুক বর্তমানে একটি শক্তিশালি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ফেসবুকে পজিটিভ এবং নেগেটিভ উভয় দিক রয়েছে। ফেসবুক ব্যবহারকে আমরা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখবো। আমরা খারাপকে বর্জন করবো। ভালোকে গ্রহণ করবো। তাই এ মাধ্যমকে পুরোপুরি নিরুৎসাহিত করা যাবে না। বই পাঠে উৎসাহিত করার জন্যে আমাদেরকে একুশের বই মেলার মতো বিভিন্ন উপলক্ষ্যে কিংবা স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে বই মেলা আয়োজন করা যায়।
চট্টলার ডাক : দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের কি করা উচিৎ?
শাহেদা আলম : দুর্নীতি দেশের একটি প্রধান সমস্যা। যা দেশকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। দেশের সম্ভাবনাকে নষ্ট করে। দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারকে আরো আন্তরিক হতে হবে। পুলিশ সহ সকল সরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রতি বছরে একবার দুদক কার্যালয়ে সম্পদের তথ্য বিবরণ জমা দেয়া উচিত। একইভাবে দুদকের মাধ্যমে বছরে একবার এমপি, মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিদের সম্পদের তথ্য বিবরণী জমা দেয়া উচিত। তা যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে সরকারি কাজের মাঝে সচ্ছ¡তা যেমন আসবে, ঠিক তেমনি দুর্নীতি দমন সম্ভব হবে। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রতি নজরদারি বাড়াতে হবে। পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ও সেনাবাহিনী ঠিক ভাবে কাজ করছে কিনা তারও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত।
চট্টলার ডাক : দিন দিন আমাদের সমাজে সামাজিক মূল্যবোধ অবক্ষয় হওয়ার কারণ কী?
শাহেদা আলম : এর পিছনে কিছু কারণ নিহিত রয়েছে। যেমন ধরুন, বাসায় সব বয়সী নরীরা অতিমাত্রায় ভারতীয় সিরিয়াল দেখা। এটি একটি অন্যতম কারণ। ভারতীয় সিরিয়ালগুলোতে শশুর-শাশুরির ঝগড়া-ঝাটি, দেবর, ননদের সাথে ভাবীর ঝগড়া-ঝাটি এমন প্রকৃতির চরিত্র বেশি দেখাচ্ছে। যা থেকে নারীরা নেতিবাচক ধারণা লাভ করায় অনেকের সংসারে তার প্রভাব পড়ছে। এছাড়া দিন দিন সামাজিক বন্ধন কমে যাওয়ায় একান্নবর্তী পরিবারগুলো ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাচ্ছে। বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানদের ভুল করার একটি সময়। কেননা কিশোরকালে সন্তানরা দিবা-নিশি রঙ্গিন স্বপ্ন দেখে। এমন কি ওই সময়ে তাদের মেজাজও থাকে খিটখিটে। তাই, বয়ঃসন্ধিকালে অভিভাবকরা সন্তানদের কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে। সন্তানদের সাথে পিতা-মাতার সম্পর্ক হতে হবে মধুর। তাঁদের সবসময় সন্তানদের প্রতি মনোযোগি হতে হবে। একইভাবে শিক্ষকদেরকেও ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আন্তরিকতা ও গাইডনেস বাড়াতে হবে।
চট্টলার ডাক : বর্তমানে দেশের প্রেক্ষাপটে যোগ্য জায়গায় যোগ্য মানুষ নেই। বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?
শাহেদা আলম : কেন যোগ্য জায়গায় যোগ্য মানুষ নেই কিংবা মেধাবীরা রাষ্ট্রিয় সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এর উত্তরতো আমার চেয়েও রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন। আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। আমি এ বিষয়ে না বলাটা শ্রেয়। একই অবস্থা তোমাদের সংবাদপত্রে। সেখানেও মেধাবী সাংবাদিকরা অবহেলিত।
চট্টলার ডাক : দেশের চাকরির বাজারে কর্মসস্থানের ক্ষেত্রে মেধাবী তরুণদের নিয়োগে বড় ধরনের শূন্যতা রয়েছে। এতে যোগ্য স্থানে যোগ্যরা নিয়োগ পাচ্ছেনা ?
শাহেদা আলম : প্রথমত, এর জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। ঘুনে ধরা রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। বেকার যুবকরা চাকরি না পেলে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা হিসেবে যে কোন ব্যাংক থেকে শহজ শর্তে লোন পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে সরকারকে। যদিও বর্তমান সরকার অতীতের মতো তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিটি ঘরে একজনকে সরকারি চাকুরি দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। বিষয়টি বাস্তবায়ন করা গেলে অতিসত্ত¡র বাংলাদেশ সত্যিকার উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে।
চট্টলার ডাক: ভূমিদস্যুদের বেপরোয়া তান্ডবে খেলাধুলার পর্যাপ্ত মাঠ নেই দেশের প্রধান নগরগুলোতে, যার ফলে শিশু, কিশোর থেকে শুরু করে তরুণদের ক্রীড়া ও বিনোদন চর্চা ব্যাহত হচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনার মতে সরকারের কি করা উচিত?
শাহেদা আলম : এটি একটা চিন্তার বিষয়। দিন দিন নগর থেকে খেলার মাঠ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। খেলার মাঠের প্রকটে শিশুরা কম্পিউটার গেম খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। শিশুরা ইন্টারনেট এবং কম্পিউটারভিত্তিক ভার্চুয়াল হয়ে গেছে। এটি মোটেই শুভকর নয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শিশুরা বড় হলে বিপথে যাবে। যেভাবে এখন কিশোর ও তরুণরা খেলাধুলা করতে না পেরে বিপথে গিয়ে মাদক, ছিনতাই সহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। এর দায়ভার আজ কে বহন করবে? আচ্ছা, একজন মানুষের বেঁচে থাকতে হলে কত সম্পদের দরকার? একজন মানুষ মৃত্যুর সময় দশ থেকে বারোটি ফ্ল্যাট, নানা রঙের বিলাসবহুল গাড়ি, হাজার হাজার কোটি টাকা সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে না। এর কোনোটাই সম্পদ শোষক কিংবা রক্ত শোষক যাই বলি না কেন, মৃত্যুর সময় কবরে নিয়ে যেতে পারে না। মৃত্যুর সময় কবরে শুধু নিয়ে যেতে পারে তার আমলনামা, সততা ও আন্তরিকতা। তা যদি হয়, তবে, ভূমিদস্যুরা নগরে শিশুদের মাঠগুলো দখল করে হাইরাইজড এপার্টমেন্ট করবে কেন? এ নিয়ে সরকার, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও হৃদয়বানদের ভাবতে হবে।
চট্টলার ডাক: বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে আপনার কাছ থেকে কিছু জানতে চাই--
শাহেদা আলম : পশ্চিম পাকিস্তানীরা আমাদের ভাষা কেড়ে নেয়ার দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারি শহিদরা জাতিকে সে মহৎ ও র্দুলভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্র“য়ারিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ও যুব সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখ রাঙানি এবং প্রশাসনের ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে রাজপথে নেমে আসে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতিতে পাকিস্তানি শাসকদের শঙ্কিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, রফিক ও বরকত গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হোন। এই আন্দোলনের সূত্র ধরেই অঙ্কুরিত হয় স্বাধীনতা যুদ্ধের বীজ।
মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আপনার কাছ থেকে কিছু জানতে চাই---
শাহেদা আলম : ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা প্রাপ্তি বাঙালি জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন। আমাদের জাতীয় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবময় ঘটনা। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়েই আমরা লাভ করেছি স্বাধীন দেশ, নিজস্ব পতাকা। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলার ছাত্র-যুবক, কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণ বর্বর হানাদার পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। তারই পরিণতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। বিশে^র মানচিত্রে খচিত হয় একটা নাম-স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
চট্টলার ডাক: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপনার যদি কোনো স্মৃতিচারণ থাকে --
শাহেদা আলম : মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ঢাকায় অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ ২৫শে মার্চ গভীর রাতে পাক হানাদার বাহিনীর বেপরোয়া গোলাগুলি বর্ষণ শুরু করে। শুরু হয় কারফিউ। তলাশীর নামে লুটপাট, ধরপাকড়। লুণ্ঠিত হয় মা-বোনদের ইজ্জত। চলতে থাকে পাক হায়েনাদের তাণ্ডবলীলা। নিরীহ জনগণ সোচ্ছার হলো। এক এক করে দলে দলে ঝাঁপিয়ে পড়ল মুক্তির সংগ্রামে। হাতিয়ার ছিল বঙ্গবন্ধুর বাণী ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ আমার তিন ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস খুবই গৌরবের। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সালের ঘটমান ইতিহাস পর্যালোচনা করলে তা অনায়সে বোঝা যায়। ওই সময়টাতে বাংলাদেশের কত চড়াই-উৎরাই রয়েছে। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সাধারণ নির্বাচন ও ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন। ১৯৬৭-৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। এসব স্মৃতি প্রতিনিয়ত আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।
চট্টলার ডাক ডেস্ক: ইসলামি পরিভাষায় নির্দিষ্ট কয়েকটি শব্দ আছে, যে শব্দ গুলো প্রত্যেক মুসলমানই জানেন। কিন্তু এর ব্যবহ�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের মানুষের আয় হ্রাস পাওয়ায় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর জরিপ�...বিস্তারিত
আফছার উদ্দিন লিটন: সম্পাদকীয় ... আবরার হত্যা মামলায় আসামীদের ফাঁসির রায় হয়েছে, কার্যকর হয়নি। ফেনীর নুসরাত হত্যা মামল�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: তুমি হৃদয় হাসান বাবু আমার একটা তুমি চাই, যেই তুমিতে প্রাণটা নাচে হাজার রঙ দেখতে পাই। আমার এক�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: তুমি অবিনশ্বর আলেয়া চৌধুরী শুভ সুন্দর প্রত্যয়ে কোটি মানুষের হৃদয়ে কিংবদন্তি তাজ সংগ্রামে সাহস...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: দ্রব্য মূল্যের ঊর্দ্ধগতি বাবুল কান্তি দাশ দ্রব্য মূল্যের ঊর্দ্ধগতি উদ্বিগ্ন সবাই, হা-হুতাশে স�...বিস্তারিত
© Copyright 2024 Dainik Chattalar Dak