শিরোনাম
আফছার উদ্দিন লিটন: | আপডেট: ০৫:৫১ পিএম, ২০২৪-১০-১০ 70
পাঁচআগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার থেকে মুক্তি পাওয়ার দিন। বিজয়ের দিন। দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের দিন। এ স্বাধীনতা আমাদের এনে দিয়েছে দেশপ্রেমিক আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ইয়ামিন, মো. ওয়াসিম আকরামসহ হাজারো সাহসি ছাত্র-ছাত্রী ও সংগ্রামী জনতার আত্মত্যাগ ও আত্মদানে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নির্মম দুঃশাসন, গুম, খুন, গণতন্ত্র হত্যা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা থেকে বাদ যায়নি অবুঝ শিশু ও কিশোররা--তারাও ঘাতক পুলিশ এবং শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ নামীয় সাদ্দাম বাহিনী ও নিখিল- শেখ পরশের যুবলীগ বাহিনী দ্বারা মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে। নয়তো বুক ঝাঁজরা হয়েছে। অনেকেই হয়েছেন অন্ধত্ব। অনেকই হয়েছেন পঙ্গুত্ব।
পাঁচ আগস্ট ছাত্রদের তোপের মুখে স্বৈরাচার সরকার দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। তাঁর মন্ত্রী -এমপিদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালালেও কিছু এমপি -মন্ত্রী এখনো দেশে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নিরাপদে রয়েছেন। আবার এদের কেউ কেউ গ্রেপ্তারও হয়েছেন। ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সাারাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের ছাত্রলীগ, যুবলীগ কোটাসংস্কার আন্দোলনকারী ও সরকার পতনের আন্দোলনকারীদের উপর যে নৃশংস বর্বর হামলা চালিয়েছে তা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এ দুই আন্দোলনে ফেসিস্ট সরকার অগণিত ছাত্র -জনতাকে হত্যা করেছে।
১৬ জুলাই চট্টগ্রাম, ঢাকা, রংপুরসহ সারাদেশে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা মারমুখী হওয়ায় আন্দোলনের গতি আসে। সেদিন রংপুর আবু সাঈদ হত্যা হয়। চট্টগ্রামে মো.ওয়াসিম আকরাম, মো. ফারুক ও ফয়সাল আহমেদ শান্ত নিহত হয়। এরপরে যা ঘটে ইতিহাস তো বটে; তা লিখে শেষ করা যাবে না। শেখ হাসিনা সরকারের এ নৃশংস বর্বর হামলা--আমি একজন লেখক, সাংবাদিক ও সংগঠক হিসেবে সমর্থন করি না।
পাঁচ আগস্টের পর দেখা যায় কিছু বিএনপির কর্মী, তাদের বিএনপির কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং হয়রানি মামলা দেয়। প্রকৃতপক্ষে যারা ছাত্র -জনতার উপর গুলি ছুঁড়েছে, পিটিয়ে আহত কিংবা নিহত করেছে কিংবা ফেসিস্ট সরকারের অতি উৎসাহী হয়ে যেসব পুলিশ নির্বিচারে গুলি ছুঁড়ে নিরীহ ছাত্র -জনতাকে হত্যা করেছে তাদেরকে মামলা না দিয়ে বিএনপি কেন বিএনপির কর্মীদের হয়রানি মামলা দেবে?
২০২৪ সালের ২০ জুলাই স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে কারফি উজারি করেন। সেনাবাহিনী তখন মাঠে নামায় রাস্তায় কোনো মানুষের চলাচল ছিল না। দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তেমন একটা খোলা ছিল না। অথচ, চট্টগ্রামে সেদিন আমার এক শুভাকাঙ্ক্ষী বিএনপি সমর্থনকারী কাল্পনিক ভিত্তিহীন মিথ্যা মামলায় শিকার হোন। তাঁর নাম নুরুল আলম। তিনি ২০০৯ সাল থেকে চকবাজার থানাধীন চট্টশ্বরী রোডে বসবাস করেন। তাঁর তিনপোলের গোলাম রসুল মার্কেটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া তিনি গোলাম রসুল মার্কেট বণিক সমিতির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গরীবুল্লাহশাহ হাউজিং সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন বিধায় গরীবুল্লাহশাহ হাউজিং সোসাইটির কোনো মিটিং বা সামাজিক অনুষ্ঠান থাকলে (বন্ধের দিন হলে) সোসাইটিতে আসতেন। ২০২৪ সালের ২৬ আগস্টের খুলশী থানার ৯নং মামলার এজাহার পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে এজাহারে উল্লেখিত ১ থেকে ১০ নং বিবাদির অধিকাংশই বিএনপি সমর্থনকারী। চার থেকে পাঁচজন আওয়ামী লীগ সমর্থনকারী। ওই মামলায় বাদি রায়হান আলমের সঙ্গে এলাকায় বিবাদীদের সাথে দলীয় গ্রুপিং রয়েছে; যার কারণে নুরুল আলমদের মতো ব্যক্তিদের আওয়ামী লীগের নেতা বলে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেন হয়রানি করার উদ্দেশ্য।
ওই মামলায় বাদির এজাহারে আরও উল্লেখ রয়েছে -২০ জুলাই বিকাল চারটার সময় তিনি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে খুলশী থানাধীন গরীবুল্লাহ শাহ হাউজিং সোসাইটি গেইটের সামনে রাস্তায় এসে পৌঁছালে মামলায় উল্লেখিত ১ থেকে ১০ নং বিবাদি তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এমনকি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে সেখানেও তাঁকে প্রচুর মারধর করে ফেলে চলে যায়।
এ বিষয়ে বিবাদি নুরুল আলমের ভাষ্য হলেন- “আমরা যদি বাদি রায়হান আলমকে ২০ জুলাই বিকাল চারটার দিকে মারধর করতাম, তাহলে সেতো মেডিকেলে চিকিৎসা নেয়ার কথা? প্রকৃত সত্য হলো- ২০ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে কারফিউ জারি করায় সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি। আমিও সেদিন ঘরে ছিলাম এবং আমাদের মার্কেটও বন্ধ ছিল। আমি যদি ঘরে থাকি-রায়হান আলমকে মারলাম কখন? আর হামলা করলাম কখন? আমি ব্যক্তিগতভাবে রায়হান আলমকে কখনও দেখিনি। তাকে চিনিও না। তার সাথে কখনো মোবাইলে কথাও হয়নি।”
শুধু তাই নয়, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বিকাল পাঁচটার সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনে রায়হান আলমকে আওয়ামী লীগ সরকারের লোকজন পাঁচলাইশ মডেল থানার ১৭ নং মামলায় ৭ নম্বর আসামি করেন। ওই মামলায় রায়হানকে ২০ কিংবা ২১ জুলাই পাঁচলাইশ মডেল থানা আটক করে ২২ জুলাই চট্টগ্রাম আদালতে প্রেরণ করেন। ওই মামলা অন্তরর্বর্তীকালীন সরকার প্রত্যাহার করায় রায়হানকে সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট মুক্তি দেয়া হয়।
২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট বিবিসি নিউজ বাংলার একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে--সরকারবিরোধী আন্দোলন চলার সময় মৃত্যুর সংখ্যা জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী অন্তত সাড়ে ছয়শজন। যদিও ওই সময় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় মৃত্যুর সংখ্যা এখনো বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে মৃত্যুর সংখ্যা ১৪শ পেরিয়েছে। কোটা আন্দোলন ও সরকার পতনের আন্দোলন ঘিরে জুলাই-আগস্ট মাসে যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তাকে ‘জুলাই গণহত্যা’ নামে অভিহিত করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
ওই প্রতিবেদনের আরো একটি অধ্যায়ে বিশিষ্ট আইনবিদ মি. শাহদীন মালিক বলেন, “আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপিসহ বিরোধী নেতা কর্মীদের দৌড়ের উপর রাখার জন্য এভাবেই মামলা করা হতো। একেকজনের বিরুদ্ধে শ’খানেক মামলাও ছিল। কোনো মামলায় বিচার করে তাদের দোষী প্রমাণ করতে পারেনি। সেসব মামলায় দোষী প্রমাণ করা উদ্দেশ্য ছিল না। উদ্দেশ্য ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের দৌড়ের উপরে রাখা। উদ্দেশ্য ছিল তাদের ভয়-ভীতি দেখানো, তটস্থ রাখা। বিচার নিশ্চিতের জন্য ফৌজদারি মামলা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে হবে বলে জানান তিনি।”
২০২৪ সালের ১লা জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা প্রকৃতভাবে ছাত্র-জনতার উপর হামলা করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিৎ। যারা প্রকৃতপক্ষে কোনো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত নয় তারা যেন মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার না হয়। সেদিকে প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নজর দেয়া প্রয়োজন।
লেখক ও সংবাদকর্মী
আফছার উদ্দিন লিটন: ২০২১ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে হঠাৎ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ গণহারে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের আইডি রহ�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: ফুসফুসের রোগে যারা ভুগছেন, শ্বাস-প্রশ্বাসে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে তাদেরকে সুখবর দিয়েছে ডান্...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: সত্তর দশকের শেষ দিকে সোলসের লিড গিটারিস্ট সাজেদুল আলম বিদেশ চলে যান। অনেকে এই শূন্য পদের জন্য আগ্র...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: এটা হলো পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম লাইব্রেরি “ The British Library" যেখানে বইয়ের পরিমাণ প্রায় ১৭০ থেকে ২০০ মি...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: ইউরোপের বলকান অঞ্চলের স্বাধীন দেশ কসোভো (Republic of Kosovo)। এটি সর্বশেষ স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পৃথি�...বিস্তারিত
চট্টলার ডাক ডেস্ক: রাশিয়ায় মসজিদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার গ্রা...বিস্তারিত
© Copyright 2024 Dainik Chattalar Dak