আজ  রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪


রোজা রাখছি নাকি না খেয়ে থাকছি ❓

  মো. ইউছুফ চৌধুরী   |   আপডেট: ০৫:২৮ পিএম, ২০২৪-০৩-২১    347

 

রোজা রাখছি নাকি না খেয়ে থাকছি ❓

প্রতিদিন প্রায় ১৩ ঘণ্টার বেশি না খেয়ে রোজা রাখলেন। লুকিয়েও কিছু খাননি। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে কষ্ট করেছেন, তবুও রোজা ভাঙ্গেননি। কিন্তু মাস শেষে যদি জানার সুযোগ থাকতো, আপনি জানতে পারলেন আপনার একটা রোজাও কবুল হয়নি, তখন কেমন লাগবে? রোজা রেখেছেন, সওয়াব পাননি। বিনিময়ে শুধু ক্ষুধার্তই থেকেছেন! আমাদের সমাজের অনেকেরই এমন হয়!

রাসূলুল্লাহ বলেছেন, “কত রোজাদার আছে যাদের রোজার বিনিময়ে ক্ষুধা ছাড়া আর কিছুই জোটে না!” (ইবনে মাজাহ: ১৬৯০) তারা কারা? রাসূলুল্লাহ বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তাঁর এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।” (সহিহ বুখারী: ১৯০৩)।  
অর্থাৎ রমাদান মাস শুধুমাত্র উপোষ থাকার মাস না। কেবল না খেয়ে থাকলেই রোজা হবে না। রোজার সওয়াব পেতে হলে আপনাকে স্বভাব চরিত্রকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। মিথ্যা বলা ত্যাগ করতে হবে, আমানত রক্ষা করতে হবে, কাউকে গালি দেয়া যাবে না, অশ্লীল কথা-কাজ পরিহার করতে হবে, গীবত ও পরনিন্দা চর্চা ত্যাগ করতে হবে, ঘুষ ও সুদ না নেয়া, মজুদদারি ও অতিমুনাফা হতে দুরে থাকা। পরের হক নষ্ট না করা, কর্মস্থলে ফাঁকি না দেয়া। অথচ আমরা অহরহই এমন করি।

আপনি হয়তো ভাবছেন রোজা রাখছেন। কিন্তু, রাসূলুল্লাহ বলছেন- এগুলো রোজা না, এমন রোজার আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। আল্লাহ এমন রোজা কবুল করেন না। তাহলে কীভাবে পরিপূর্ণভাবে রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে?


নিজের চরিত্রকে উন্নত করা। স্বভাব চরিত্র, চিন্তা-চেতনা আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী পরিশুদ্ধ করা। তাকওয়া বা আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়ে যাবতীয় খারাপ কথা ও কর্ম ত্যাগ করে সৎ জীবন যাপন করা।

রাসূলুল্লাহ বলেছেন, “ যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে, আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে একটি ঘরের জিম্মাদার।” (আবু দাউদ: ৪৮০০)।  আল্লাহ তা'য়ালা বলেন, "আমি তোমাদের উপর রোজা ফরজ করেছি, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো" (সুরা বাকারা:১৮৩)।  

তাকওয়া হলো প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের রোজা--মুখের বা জবানের রোজা হলো কুবাক্য ও কুকথা পরিহার করা; পরচর্চা, গিবত, শিকায়েত ও পরনিন্দা থেকে বিরত থাকা। চোখের রোজা হলো হারাম দৃশ্য দেখা বর্জন করা। কানের রোজা হলো হারাম শোনা থেকে বেঁচে থাকা। হাতের রোজা হলো হারাম ধারণ ও হারাম স্পর্শ থেকে দূরে থাকা। পায়ের রোজা হলো অন্যায় পথে গমন বা পদচারণ না করা।

মন, মস্তিষ্ক ও অন্তরের রোজা হলো পাপ ও অন্যায় চিন্তা, কল্পনা ও পরিকল্পনা থেকে মুক্ত থাকা। তাকওয়া মানে পরিশুদ্ধ অন্তর, তাকওয়া মানে বিশুদ্ধ কর্ম। তাকওয়া মানে শুদ্ধাচার, নৈতিকতা, ন্যায়পরায়ণতা, মানবিক মূল্যবোধ, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিকতা। সঠিকভাবে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মানুষ নিখাদ খাঁটি সোনায় পরিণত হতে পারে। আল্লাহ যেন আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রে তাকওয়া বা আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়ে সব ধরনের খারাপ কাজ হতে বিরত থাকার তৌফিক দান করেন।

 লেখক ও মানবাধিকার কর্মী

 

রিলেটেড নিউজ

স্বাধীনতা আর গণতন্ত্র কোথায়?

মো. রাশেদুল ইসলাম-রাশেদ স্বাধীনতা আর গণতন্ত্র কোথায়? মো. রাশেদুল ইসলাম রাশেদ   তোমার দেয়া দেশটা শুধু আছে, নাম ভাঙিয়ে খা...বিস্তারিত


দিক হারা পথিক

আফছার উদ্দিন লিটন: দিক হারা পথিক আফছার উদ্দিন লিটন বেকারত্বের অভিশাপে তরুণদের মনে হাহাকার কে দেবে তাদের কর্মসংস্�...বিস্তারিত


জনতা ব্যাংক চাক্তাই শাখার গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

চট্টলার ডাক ডেস্ক: জনতা ব্যাংক পিএলসি চাক্তাই শাখার উদ্যোগে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নির্দেশত “ ৫০ দিনের বি...বিস্তারিত


নারী শুধু ঘর সামলায় না

মো. বেলাল হোসেন চৌধুরী ‘নারী মাঠে যেতে পারে না’-এ কথা আমরা বলতে চায় না। তারা সব পারে; কিন্ত পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান �...বিস্তারিত


দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝে না কেউ

মো. বেলাল হোসেন চৌধুরী (১) আমি শুধুশুধু অনর্থক যেই ভদ্রলোকটার  বিরুদ্ধে আক্রোশ বা ষড়যন্ত্র করি, পরবর্তীতে দেখা যায় তার অ�...বিস্তারিত


তরুণ প্রকাশকদের অংশগ্রহণে তিনদিনব্যাপী ‌‌প্রশিক্ষণ কর্মশালার সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন

চট্টলার ডাক ডেস্ক: তরুণ প্রকাশকদের অংশগ্রহণে তিনদিনব্যাপী ‌‌'সৃজনশীল প্রকাশনা খাত: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা' শীর্�...বিস্তারিত